দার্জিলিংয়ের প্রত্যন্ত প্রান্তে ঘুমিয়ে থাকা ছোট্ট একটি গ্রামের নাম তিনচুলে অনেকে ভালোবেসে বলে থাকেন – A small hamlet in the Himalayas. কার্শিয়াংয়ের তাকদায় ওল্ড ক্যান্টনমেন্ট এরিয়ায় তিনচুলে গ্রাম। শিলিগুড়ি থেকে দূরত্ব ৮০ কিলোমিটার। তিনচুলে নামের মানে হলো – তিনটে চুল্লি বা চুলা! নিজেদের গ্রামকে এখানকার বাসিন্দারা পরিণত করেছেন ইকো-আরবান ভিলেজে। আপনি যদি হন প্রকৃতিপ্রেমী, খাদ্যরসিক ও পক্ষীপ্রেমী হয়ে থাকেন, তবে তিনচুলে (Tinchuley) আপনার সেই জায়গা। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য চোখ জুড়ানো। স্বর্গের চেয়ে কম নয়! চোখজুড়ানো সবুজ আর গ্রাম্য মানুষের আতিথেয়তা সারা জীবন মনে থাকবে। এখান থেকে পুরো হিমালয়ান রেঞ্জের একটা ১৮০ ডিগ্রি ভিউ পাওয়া যায়। বিশেষ করে, কাঞ্চনজঙ্ঘার চোখ ঝলসানো সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য তিনচুলে এর চেয়ে ভাল জায়গা কমই আছে। গুম্বাদারা ভিউ পয়েন্ট থেকে দেখা যায় তিস্তার অপূর্ব রূপ। ছবি-শিকারিদের জন্য স্বর্গরাজ্য বলা যায় তিনচুলেকে। বিশেষ করে যদি সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের ছবি তুলতে চান। নভেম্বর-ডিসেম্বরে গেলে আকাশ পরিষ্কার পাবেন।
তিনচুলে আকর্ষণ এর নিসর্গ। কাছের সবুজ পাহাড় আর দূরের তুষারধবল শৃঙ্গ আপনার মন কাড়বে। সবুজ পাহাড়ের মধ্যিখানে দূর থেকে উঁকি দেয় বরফে ঢাকা ধবল পর্বতশৃঙ্গ। এ ছাড়া তিনচুলের আকর্ষণ হল কমলালেবুর বাগান। যদি শীতের সময় যান, তা হলে দেখবেন গাছে গাছে টসটসে পাকা কমলালেবু। দীর্ঘ জায়গা জুড়ে বিস্তৃত এখানকার কমলালেবুর বাগান। ধারে কাছে রয়েছে তাকদা অর্কিড সেন্টার। নানা ধরনের অর্কিড দেখে তাক লেগে যাবে। পায়ে পায়ে দেখে নিন তিনচুলে মনাস্ট্রি। যারা পাখি ভালোবাসেন, তাদের কাছে তিনচুলে গুরুত্বপূর্ণ। হরেক রকমের রংবেরঙের পাখি আছে এখানে।
প্রায় সারাবছরই সেখানে থাকে মনোরম পরিবেশ। যেকোন মরশুমে বেরিয়ে পড়তে পারেন তিনচুলে এর উদ্দেশ্যে। তবে যাওয়ার সেরা সময় সেপ্টেম্বর থেকে এপ্রিল। যাঁরা পাখি দেখতে ভালোবাসেন, তাঁদের জন্যও সেখানে রয়েছে বিশেষ খোঁজ। বার্ড ওয়াচিং সেন্টারে ঢুকে পড়ুন সোজা। দেখা মেলে রংবেরঙের পাখির। চায়ের বাগান তো রয়েছেই।
কিভাবে যাবেন
দার্জিলিং, কালিম্পং ও শিলিগুড়ি থেকে গাড়িতে তিনচুলে যাওয়া যায়। দূরত্ব যথাক্রমে ৩২ কিলোমিটার, ৩৫ কিলোমিটার ও ৮০ কিলোমিটার। নিউ জলপাইগুড়ি অথবা শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং বা কালিম্পং হয়ে পৌঁছনো যাবে তিনচুলে।
কোথায় থাকবেন
প্রচুর হোম স্টে রয়েছে তিনচুলেতে। তবে আগে থেকে বুকিং করে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। রাই রিসোর্ট, দ্য ভিলেজ গেস্টহাউজ, গুরুং গেস্টহাউজ, দ্য হেরিটেজ গেস্টহাউস ইত্যাদি এখানে থাকার অন্যতম জনপ্রিয় জায়গা।
WhatsApp us