স্মরণিকা ট্রাম মিউজিয়াম

blank
ইয়াকসাম
October 17, 2020
blank
ইটানগর
October 18, 2020
Show all

স্মরণিকা ট্রাম মিউজিয়াম

blank

কলকাতাকে বর্ণনা করতে গেলে যে বিষয়গুলির নাম না উল্লেখ করলে সম্পূর্ণ হয় না তার মধ্যে তালিকার শীর্ষের দিকে স্হান পাবে ট্রাম। ইংরেজ আমল থেকে এই যানটি বাঙালির গতির সঙ্গে তাল মিলিয়েছে, নানা সময় বিভিন্ন কবি ও সাহিত্যিকদের কলমে বর্ণিত হয়েছে। একসময় এই যানটি মধ্যবিত্ত বাঙালির গন্তব্যের অন্যতম সঙ্গী ছিলো। গতির দৌড়ে পিছিয়ে পড়ে সে আজ বিলুপ্তির পথে। শতাব্দী প্রাচীন এই ঐতিহ্যকে খুব কাছ থেকে জানতে চাইলে যেতে হবে কলকাতার ট্রাম মিউজিয়ামে।
কলকাতা ট্রামের ১৫০ বছরের ইতিহাসকে সকলের সামনে তুলে ধরার জন্যে কলকাতা ট্রামওয়ে কোম্পানি (CTC) এই অভিনব ট্রাম মিউজিয়াম (Smaranika Tram Museum) তৈরি করেছে। ২০১৪ সালের ২৯শে সেপ্টেম্বর উদ্বোধন করা হয় কলকাতা ট্রাম মিউজিয়ামটির। স্মৃতি বিজড়িত এই মিউজিয়ামের নাম দেওয়া হয় ‘স্মরণিকা’।
ধর্মতলার ট্রাম ডিপোয় রাখা হয়েছে এই মিউজিয়াম ট্রামটি। ট্রাম মিউজিয়ামে টিকিট কেটে ভিতরে প্রবেশ করতে হয়। প্রথম কামরাটি ক্যাফেটেরিয়া, দ্বিতীয় কামরা হল মিউজিয়াম। কলকাতায় ট্রামের শুরুর দিনগুলি সম্পর্কিত নানা খুঁটিনাটি ইতিহাস জানা যাবে এখানে। এটিই দেশের একমাত্র ট্রাম মিউজিয়াম।
কামরার দেওয়াল জুড়ে পুরানো কলকাতার ছবি ও ট্রামের বিবর্তনের ছবি লাগানো আছে। ছোট কাচের বাক্সে রাখা আছে প্রথম ঘোড়ায় টানা ট্রামের রেপ্লিকা। দেওয়ালে সাজানো ট্রাম কন্ডাকটরদের বাহুবন্ধ, ট্যাসেল থেকে ব্যবহারিক টুপি, ব্যাজ ও বেল্ট। দেখে নেওয়া যাবে ট্রামটিকিটের বিবর্তনের ইতিহাস। কাচের বাক্সে দেখা যাবে বলাকা ট্রামের রেপ্লিকা, ফ্লাট ওয়াগন এর রেপ্লিকা সহ আরো কিছু জিনিস। এছাড়াও ট্রাম সম্পর্কিত অনেক কাহিনী। দেওয়াল জুড়ে ফ্রেমে সাজানো আছে পুরানো দিনের ট্রামের পথচলার গল্প।
মিউজিয়ামের ভেতরেই চা, কফি, চিপস্, বিস্কুটের স্টল। ভেতরে বসার স্হানগুলোতে মৃদু আলোর ইলেকট্রিক বাতি আর ট্রামের শেষ প্রান্তের দেওয়ালে জীবনানন্দ দাশ, উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরী, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ও তাদের বিখ্যাত লাইন। উফঃ এক কাপ চা হাতে নিয়ে চুমুক দিতে দিতে চলে যাবেন সেই পুরোনো কলকাতায়। যেন হাতে টানা রিক্সা কলকাতার রাস্তায় হেঁটে চলেছে, দূরে ট্রামর জন্য ধুতি ও সাদা পাঞ্জাবী পরে মানুষ অপেক্ষারত। ভোঁওও.. করে ছুটে চলেছে ইংরেজ সাহেবদের কালো গাড়ি। এক মুহূর্তের জন্য নিজেকে জাতিস্মর বলে মনে হতে পারে। আসলে সামনে যাদের ছবি ছিল আর লেখাগুলি সঙ্গে পারিপার্শ্বিক পরিবেশ যে কাউকেই নিজেকে ভুলিয়ে দেবে। আধুনিক বাঙালির কফি স্টোরগুলি বা নামী-দামি রেস্টুরেন্টেকে হার মানাবে এই পরিবেশ তবে হ্যাঁ যদি ব্যাক্তির মধ্যে কলকাতার প্রতি ভালোবাসা ও বাঙালি স্বত্তা না থাকলে হয়তো বা অনুভব করতে পারবে না।

সময়সূচী ও টিকেট
সপ্তাহের বৃহস্পতিবার ছাড়া বাকি সবকটা দিন ট্রাম মিউজিয়াম খোলা থাকে। দুপুর ১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে। টিকেট মাত্র ১০ টাকা।

যাওয়ার উপায়
মেট্রো করে এসপ্লানেডে নামুন বা বাসে করে ধর্মতলা চলে যান। এবার যে কাউকে জিজ্ঞেস করলেই ট্রাম ডিপো দেখিয়ে দিবে, সেখানেই ট্রাম মিউজিয়ামটি অবস্থিত।

কিছু তথ্য
মোবাইল ব্যাতিত ছবি তোলা নিষিদ্ধ। স্নাকস হিসেবে চা, কফি, চিপস ও বিস্কুট পাওয়া যায় তবে কিনে খেতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *