ঝান্ডি

blank
চেইল
October 19, 2020
blank
Lepchakha
October 19, 2020
Show all

ঝান্ডি

blank

কুয়াশা মেঘের খেলা দেখে মন খারাপ না করে মন ভালো করার নাম ঝান্ডি। এ যেন মেঘের বাড়ি। পাহাড় ও উপত্যকাজুড়ে অরণ্যের সৌন্দর্য। চারপাশে সবুজের কতরকম শেড। পাখির মেলা বসে চেনা অচেনাবহু পাখি। একঘেয়ে জীবন থেকে একটু নির্জনে কাটানোর সেরা ঠিকানা। নিউ মাল জংশন থেকে মালবাজার হয়ে গরুবাথান পেরিয়ে চেল নদীর জলে পা ভিজিয়ে একটু জিরিয়ে আবার সোজা উঠে যান ৬৩০০ ফুট উচ্চতায়। একরাশ মেঘের শুভ্র স্তবক নিয়ে দা রিট্রিট (The Retreat) কিংবা ঝান্ডি ইকো হাট (Jhandi Eco Hut) দাড়িয়ে আছে আপনার অপেক্ষাতেই। এতো আপনারই বাড়ি। পাইন কাঠের মন মাতানো বাংলোর ব্যালকনিতে দারিয়ে গরম চায়ে চুমুক দিতে দিতে সামনের কাঞ্চনঝন্ঘা দেখা আর রাতে হাড় কাপানো শীতে মুরগির রোস্ট এর সাথে হাল্কা পানীয়র হাল্কা আমেজ আপনাকে দেবে এক মধুর অনুভুতি। কপালে থাকলে নাথুলার রুপ দেখা থেকেও বঞ্চিত হবেন না। পায়ে হেঁটে ঘুরতেও মন্দ লাগবেনা, চারিদিকে আকাশ চুম্বী পাহাড়ের সারি আর তারই মাঝ থেকে নিচে বিস্তীর্ণ ডুয়ার্স আর তিস্তাকে উপলব্ধি করা এক অন্য রূপে। কিছুটা এডভেঞ্চার চাইলে চলে যান গীত ঝোড়া। জঙ্গলের পথ ধরে সোজা ৪ – ৫ কিলোমিটার নিচে নদীর ঠান্ডা জলে পা চুবিয়ে আবার ফিরে আসুন বাংলোতে। চাইলে সাইড সিন হিসাবে যেতে পারেন সমাবিয়ং অর্গানিক টি গার্ডেন, দুরত্ব মাত্র ৭ কিলোমিটার। সবুজ গালিচা পাতা বাগানের ভিতর ঢুকে দেখে নিতে পারেন চা তৈরির প্রণালীও। এছাড়া লাভা, রিশপ, ললেগাঁও, কোলাখাম আর ডুয়ার্স তো রইলই, চাইলে এইসব ও ঘুরে নেওয়া যায় দিনে দিনেই।

দুধারে ঘন চা বাগান, দূরে নীল নীল পাহাড়, কুয়াশা মাখা মিঠে রোদ্দুর আর মাঝখান দিয়ে কালো ফিতের মত মসৃন একচিলতে বিসর্পিল রাস্তা দিয়ে যেতে হবে ঝান্ডি। ঝান্ডি পৌঁছেই মনে হবে এ কোথায় এলাম! চারদিক ঘিরে উত্তুঙ্গ পাহাড়, দুপাশের জঙ্গলে অজস্র ফুলের হাট। মেঘের দল এসে লুকোচুরি খেলছে আপনার সঙ্গে। আর মাঝে মাঝে সেই মেঘের ঘোমটা সরিয়ে নতুন বৌ এর মত চকিত চাউনির কাঞ্চনজঙ্ঘা। এখানে শুধু পাখি আর প্রকৃতি। পাকদগুী পথে ঘুরতে বেশ লাগে। চেনা দুনিয়া থেকে অনেক দূরে যেন নিজেরই মুখোমুখি হওয়া। বাজার বা দোকানপাট কিছুই নেই ঝান্ডিতে। কেনাকাটার জন্য যেতে হয় লাভা, আলগাড়া বা গরুবাথান বাজার। ঝান্ডির রাত আরও নির্জন। চাঁদের আলোয় আরণ্যক প্রকৃতি এককথায় অনন্য।

অন্ধকার ঘন হলে সামনের লনে চেয়ার পেতে বসুন। দূরে পাহাড়ের গায়ে আলোর বিন্দু, মাথার উপর অনন্ত-বিস্তৃত ছায়াপথ আর চরাচর জুড়ে অদ্ভুত নৈ:শব্দ্য। ধূমায়িত কফির পেয়ালায় প্রথম চুমুকটা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আপনার মনে হবে – আহ, জীবনটা কতই না সুন্দর..!!

কোথায় থাকবেন
ঝান্ডিতে থাকার জন্য আছে ঝান্ডি ইকো হাট। খুব সুন্দর কটেজ ও সেই সাথে খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা। ভাড়া পড়বে ৩০০০-৩৫০০ রুপী পার কটেজ। থাকা যাবে ৬ জন, ৩ রুম পার কটেজে। সাথে আছে ডাইনিং রুম এবং ওয়েস্টার্ন স্টাইলের বাথরুম।

কিভাবে যাবেন
কলকাতা থেকে যেতে চাইলে হাওড়া থেকে কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেস ধরে সোজা চলে যান নিউ মাল জংশন স্টেশনে। NJP থেকে মাল জনশন পর্যন্ত রেল গাড়ির জার্নিটাও দারুন। মাল জংশন থেকে গাড়িতে ৩২ কিলোমিটার দুরেই ঝান্ডি। নিউ জলপাইগুড়ি থেকেও আসা যায়, সে ক্ষেত্রে আপনাকে আসতে হবে প্রায় ৮৭ কিলোমিটার। মাল জংশন থেকে গাড়িতে ঝান্ডি পর্যন্ত ভাড়া গুনতে হবে ২৫০০-৩০০০ টাকা। ঝান্ডি ইকো হাটে কথা বলে রাখলে ওরাই গাড়ি পাঠিয়ে দিবে স্টেশন এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *