তিনমুখ পিলার

blank
ঘাগড়া ঝর্ণাটি
October 25, 2020
blank
গাছকাটা ঝর্ণা
October 25, 2020
Show all

তিনমুখ পিলার

blank

তিনমুখ পিলার (Tinmukh Pillar) হলো একটি সীমানা খুঁটি, যার গায়ে বাংলাদেশ, ভারত ও মিয়ানমার লেখা। তিনমুখ পিলারটি মূলত রাঙ্গামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলার বাংলাদেশ, ভারত ও মায়ানমার সীমানায় অবস্থিত। এটি বাংলাদেশের একমাত্র সীমানা পিলার যা তিন দেশের সীমানা নির্ধারণ করেছে। যদিও এটি রাঙ্গামাটি জেলায় অবস্থিত, তবুও এখানে বান্দরবান জেলার রুমা হয়ে যাওয়াটাই তুলনামূলকভাবে সহজ। তিনমুখ পিলারের জায়গাটি অনেকটা ইংরেজি W অক্ষরের মতো। W এর মাখখানের অংশে তিনমুখ পিলারের অবস্থান। আর দুপাশে লাইস্রা হাফং ও মুখরা তুথাই হাফং নামক দুটি পাহাড়। তিনমুখ থেকে খাড়া নেমে গেলেই ভারত ও মিয়ানমার। তিনমুখ পিলার এর উচ্চতা ২৯১৫ ফুটের কাছাকাছি। Reng Tlang রেঞ্জের “মুখরা তুথাই হাফং” (Mukhra Thuthai Haphong)” এবং “লাইস্রা হাফং (Laisra Haphong)” ২টি চূড়ার মধ্যখানে অবস্থিত। এই চূড়ায়, বাংলাদেশ-ভারত-মিয়ানমারের সীমান্ত মিলিত হয়েছে।

যাওয়ার উপায়
বান্দরবান থেকে চান্দের গাড়িতে ঘন্টা চারেক যাত্রা শেষে পৌঁছে যাবেন রুমা বাস স্ট্যান্ড। রুমা পৌঁছে একজন গাইড নিয়ে ঝিরি পথে হাঁটতে শুরু করুন। কারন এই পথেই যেতে হবে বগামুখপাড়া। পাহাড়ের মাঝ দিয়ে দীর্ঘ ঝিরি পথ, কোধাও হাঁটু পানি, কোথাও পানি কোমর সমান। সেখানে গিয়ে রাতে থাকার ব্যবস্থা হবে স্থানীয়দের ঘরে।

ভোরে উঠে রওনা হতে হবে। রোদ উঠে গেলে বিপদ। বেশ অনেকটা পথ খাড়া উঠতে হবে। সাইকত পাড়ার পাশ দিয়ে এগিয়ে গেলে এ্যানোপাড়া। সেখান থেকে লম্বা পথ ধরে নিচে নেমে পাড় হতে হয় রেমাক্রি খালের একটি অংশ। পুনরায় উড়ন্তি (উপরের দিকে উঠার) পথে প্রায় আড়াই ঘণ্টার ট্রেকিং। পুরনো সব গাছে ঠাসা পাহাড়। তার ভেতর দিয়ে পথ। পাহাড়ের অপর দিকে রাইক্ষ্যং লেক যা পার্বত্য চট্টগ্রামের সর্ববৃহৎ প্রাকৃতিক লেক। লেকের পূর্ব পাড়ে গড়ে উঠেছে ত্রিপুরাদের প্রাঞ্জনপাড়া। এখানেই রাত্রি যাপন।

প্রাঞ্জনপাড়ায় রাত্রি যাপনের পর সকাল থেকে হাঁটতে শুরু করতে হবে। এক পার্যায়ে পৌঁছে যাবেন চাজিংপাড়ায়। এখানে বিশ্রাম নিয়ে হাল্কা নাস্তা পানি খেয়ে যাত্রা শুরু করতে হবে, পরবর্তী পাড়া শেপ্রুর দিকে। সম্পূর্ণ পথ খাল ধরে যেতে হবে। পাহাড়ের অনেক উঁচুতে আন্তর্জাতিক সীমানার নিকটবর্তী এলাকায় শেপ্রুপাড়ার অবস্থান, যা সংরক্ষিত বনাঞ্চলের অন্তর্গত। এখানেই রাত্রিযাপন।

শেপ্রুপাড়া থেকে খুব সকালে ট্রেকিং শুরু করে ঘন্টা তিনেকের মধ্যেই পৌঁছে যাবেন গন্তব্যের সর্বশেষ পাড়া ধুপপানিছড়া। এই পাড়া থেকেই তিনমুখ পিলারের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করতে হবে। বাঁশ, লতাপাতায় পথ যথেষ্ট দূর্গম। দা দিয়ে জঙ্গল কেটে পথ তৈরি করে যেতে হবে। কঠিন কঠোর পথ পেড়িয়ে এক সময় দেখা মিলবে প্রতিক্ষার তিনমুখ পিলার। পিলার থেকে পূর্ব পাশে সাড়ে তিন ফুট দূরেই দুই হাজার ফুট খাড়া খাদ। বহুদূরে দেখা যায় অনেক উঁচু একটি রেঞ্জ। মাঝখানে ঘন অরণ্যে ঢাকা উপত্যকা। ইচ্ছে করলেও সেখানে যাওয়ার উপায় নেই, কারণ ওটা বাংলাদেশ নয়, বাম পাশে ভারত, সামনে মিয়ানমার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *