ধুপপানি ঝর্ণা (Dhuppani Waterfall) রাঙ্গামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলার ফারুয়া ইউনিয়নের ওড়াছড়ি নামক স্থানে অবস্থিত। অনেকে এটিকে দুপপানি ঝর্না নামেও ডেকে থাকেন। আগে এটি লোক চক্ষুর অন্তরালে থাকলেও ২০০০ সালের দিকে এক বৌদ্ধ ধ্যান সন্ন্যাসী গভীর অরণ্যে দুপপানি ঝর্ণার নিচে ধ্যান শুরু করেন। প্রথমে তিনি এই জায়গায় একনাগারে প্রায় ০৩ মাস রাতদিন ধ্যান করেন। পরে স্থানীয় লোকজন জেনে ঐ বৌদ্ধ ধ্যান সন্ন্যাসীকে দিনের নির্দিষ্ট কিছু সময় বা উপলক্ষ্যে সেবা করতে গেলে এই ঝরনাটি জন সম্মুখে পরিচিতি লাভ করে।
তঞ্চঙ্গ্যা শব্দে ধুপ অর্থ সাদা আর পানিকে পানিই বলা হয় অর্থাৎ সাদা পানির ঝর্ণা। মূলত এই ঝর্ণার পানি স্বচ্ছ এবং যখন অনেক উচু থেকে তার জল আছড়ে পড়ে তখন তা শুধু সাদাই দেখা যায়। তাই একে ধুপ পানির ঝর্ণা বলা হয়। সমতল থেকে এর উচ্চতা প্রায় ১৫০ মিটার এতে নানা বন্য প্রাণী হরিণ, বুনো শুকর, বনবিড়াল, সাপ বিচরণ করে। এমনকি মাঝে মাঝে সেখানে বাঘ ভাল্লুকের পদচিহ্ন ও চোখে পড়ে । এই ঝর্ণার পানি আছড়ে পড়ার শব্দ প্রায় ২ কিলোমিটার দুর থেকে শোনা যায়। আর বর্ষাকালে তা আরো সুদুরে প্রমানিত হয়।
যাওয়ার উপায়
ঢাকা থেকে কাপ্তাই গিয়ে সেখানের লঞ্চঘাট থেকে একটা ট্রলার ভাড়া করে ২ ঘন্টা ৩০ মিনিটে বিলাইছড়ি। খাওয়া দাওয়া যাওয়ার পথে বিলাইছড়ি বাজারে করে নেবেন। কাপ্তাই থেকে বিলাইছড়ি দুইভাবে যাওয়া যায়। – ট্রলার রিজার্ভ করে অথবা লোকাল ট্রলারে করে। যদি ট্রলার রিজার্ভ করতে চান সেইক্ষেত্রে ভাড়া নিবে ১০০০-১৫০০ এর মধ্যে। অবশ্যই দামাদামি করে নিবেন। আর লোকাল ট্রলারে করে গেলে ৫৫ টাকা করে পড়বে প্রত্যেকজনের। আর লোকাল ট্রলার প্রথমটা ছাড়ে কাপ্তাইঘাট থেকে সকাল ৮.৩০ টায়। তারপর ১/১.৩০ পর পর ছেড়ে যায়। বিলাইছড়ি থেকে আরো ২ ঘন্টা পাহাড়ি ঢলের নদী পার হতে হবে উলূছড়ি পর্যন্ত। উলুছড়িতে গাইড নেবেন অবশ্যই, গাইড ফি ৫০০ টাকার মত পড়বে।
থাকার ব্যবস্থা
বিলাইছড়িতে থাকার ব্যবস্থা আছে। যদি ট্রলার রিজার্ভ করে যান তাহলে ট্রলারওয়ালাকে বলবেন হাসপাতাল ঘাটে ট্রলার থামাতে। ট্রলার থেকে নেমে নিরিবিলি বোর্ডিংয়ে উঠতে পারেন। ডাবল বেড ৫০০ টাকা, সিঙ্গেল বেড সম্ভবত ৩০০ টাকা। নিরিবিলি বোর্ডিংয়ের প্রোপাইটর হল সঞ্জয় তালুকদার এবং তার নাম্বারঃ ০১৫৫৩-১২৮৬৭৩ / ০১৮২৭-৭২২৯০৫
কোথায় খাবেন
বিলাইছড়িতে খেতে চাইলে বকুলের দোকানে খেতে পারেন। এছাড়া নিরিবিলি বোর্ডিং এর সাথে “ভাতঘর” নামে একটা হোটেল আছে। খাবার ভালো। বিশেষ করে মাছের আইটেম গুলা। ঘরোয়া পরিবেশ। দাম তুলোনামুলক কম। এছাড়া বাজারেও অনেকগুলা হোটেল আছে।
কিছু প্রয়োজনীয় সতর্কতা
জাতীয় পরিচয়পত্র নিতে হবে। না থাকলে জন্ম নিবন্ধনের সনদ। তাও না থাকলে স্টুডেন্ট আইডি কার্ড, আর চাকুরীজীবী হলে সেই প্রতিষ্ঠানের আইডি কার্ড নিতে হবে। সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে পরিচয়পত্র দেখতে চাইবে। মশার ঔষধ সাথে নিয়ে যাবেন। যথেষ্ট পরিমান পলিথিন ট্রেক করার উপযোগী জুতা/সেন্ডেল না থাকার ইচ্ছা থাকলে অবশ্যই কাপ্তাই থেকে সকাল ৬ টায় রওনা দিবেন।
WhatsApp us