শেখ মাহমুদ শাহ মসজিদ (Sheikh Mahmud Shah Mosque) বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলায় অবস্থিত একটি প্রাচীন মসজিদ। সূত্র মতে মসজিদটি ১৬৮০ সালে মোঘল স্থাপত্যরীতি মেনে নির্মিত যার নির্মাতা বণিক শেখ মাহমুদ। এই মসজিদটির মূল নাম শাহ মাহমুদ মসজিদ হলেও ইউনেস্কো থেকে প্রকাশিত মুসলিম স্থ্যাপত্যের ক্যাটালগে একে “শাহ মোহাম্মদ মসজিদ” হিসাবে নির্দেশ করা হয়েছে। এই মসজিদটি কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার দূরে মঠখোলা- মির্জাপুর-পাকুন্দিয়া সড়কের পাশে এগারসিন্দুর গ্রামে অবস্থিত যা ঈসা খাঁর দুর্গ থেকে ১ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত। শেখ মাহমুদ শাহ মসজিদ থেকে একটু দূরেই শেখ সাদি জামে মসজিদ। মসজিদটি সাদামাটা ভাবেই নির্মিত হয়েছে। শাহ মাহমুদের ভাই শেখ সাদির নামেই মসজিদটির নামকরণ হয়েছে। স্থানীয় সূত্রমতে জানা যায়, শাহ মাহমুদ মসজিদ করার ২০ বছর আগেই শেখ সাদি মসজিদটি নির্মিত হয়। শাহ মাহমুদ ও শেখ সাদি দুই ভাই এবং দুজনই ব্যবসায়ী ছিলেন।
চারপাশে আড়াইফুটি দেয়াল ঘেরা একটি উঁচু প্লাটফর্মের উপর ১৬৮০ সালে নির্মিত এই মসজিদটিতে রয়েছে মোঘল শিল্পরীতি ও স্থানীয় শিল্পরীতির নিপুণ সমন্বয়। এক গম্বুজবিশিষ্ট বর্গাকৃতি এই মসজিদের প্রতিটি বাহুর দৈর্ঘ্য ৩২ ফুট, যার চার কোণায় আট কোণাকৃতির বুরুজ রয়েছে। মসজিদের ভিতর ও বাইরের রয়েছে পোড়ামাটির চিত্রফলক এবং পূর্বের দেয়ালে ৩টি দরজা ও ছনের কুটীরের ন্যায় অত্যন্ত আকর্ষণীয় একটি পাকা দোচালা ভবন রয়েছে। অনেক আগে মসজিদের চার কোণায় চারটি মূল্যবান প্রস্তর ফলক ছিল যা বর্তমানে লুন্ঠিত।
যাওয়ার উপায়
ঢাকার মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে অনন্যা ও অনন্যা ক্ল্যাসিক নামে দুটি বাস সার্ভিস চালু আছে। প্রথমটি লোকাল, দ্বিতীয়টি সিটিং সার্ভিস। ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ার থানাঘাট মোড় পর্যন্ত অনন্যা ক্ল্যাসিকের ভাড়া জনপ্রতি ১৫০ টাকা। অনন্যার ভাড়া ১০০ টাকা। প্রতি ১৫ থেকে ২০ মিনিট পরপর গাড়ি ছাড়ে। পাকুন্দিয়ার থানার ঘাট মোড়ে নেমে যেকোন অটোরিক্সাকে বললে নিয়ে যাবে শেখ মাহমুদ শাহ মসজিদ।
এছাড়া যারা কিশোরগঞ্জ সদর থেকে যেতে চান, তাঁরা কিশোরগঞ্জের নগুয়া সিএনজি স্ট্যান্ড থেকে সিএনজি বা অটোগাড়ি যোগে ৩০ টাকা ভাড়ায় পাকুন্দিয়া বাজার চলে যাবেন। এখানে সিএনজি পরিবর্তন করে নতুন সিএনজি বা অটোরিক্সা যোগে মসজিদে যেতে পারবেন। এখেত্রেও ভাড়া পড়বে ৩০ টাকা।
কোথায় থাকবেন
কিশোরগঞ্জ শহরে বিভিন্ন মান ও দামের আবাসিক হোটেল আছে। বিলাসবহুল হোটেলের মধ্যে রয়েছে ক্যাসেল সালাম ও উজান ভাটি। উজান ভাটির এসি কক্ষের প্রতি রাতে ডাবল বেডের ভাড়া ১ হাজার ২০০ টাকা। নন–এসির ভাড়া ৮০০ টাকা। এ ছাড়া গাঙচিল, রিভারভিউ, নিরালা, আল মোবারকসহ বিভিন্ন আবাসিক হোটেল আছে। এসব হোটেলের সিঙ্গেল বেডে রাত্রিযাপনের খরচ ন্যূনতম ২৫০ টাকা, ডাবল বেডে ৩৫০ টাকা।
WhatsApp us