হাফলং

blank
মনোলিথ পার্ক
October 17, 2020
blank
কেউজিং
October 17, 2020
Show all

হাফলং

blank

আসাম এর উত্তর কাছাড় জেলার সদর শহর হাফলং৷ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে হাফলং এর উচ্চতা ৬৮০ মিটার৷ হাফলং এসেছে ‘হাঁফলাঁও’ শব্দটি থেকে৷ দিমাশি ভাষায় হাঁফলাঁও কথার অর্থ উইয়ের ঢিপি৷ চমৎকার পাহাড়ি প্রকৃতি এখানকার প্রধান আকর্ষণ৷ পাইন আর নীল অর্কিডে ছেয়ে থাকে এই শৈলশহর৷ ফুলের শহর বলা হয় হাফলংকে৷ নানা ধরনের ফুল, বিরল শ্রেণির পাখি, নাশপাতি, আনারস, কমলালেবু প্রভৃতি ফলের সমাহার আর সুন্দর প্রাকৃতিক শোভা হাফলং এর প্রধান আকর্ষণ৷ আর শহরের একেবারে মধ্যিখানে অবস্থিত এক লেক৷ যার স্বচ্ছ লেকের জলে বোটিং করতে পারেন৷ ঘুরে দেখুন শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত চক বা ম্যাল৷ এছাড়া প্যারাগ্লাইডিং করতে পারেন৷ ছোট্ট অথচ এক নৈসর্গিক সৌন্দর্যে ভরা এই শৈল-শহর যার খোঁজ অনেকেরই অজানা। ভোরবেলা চোখে পড়ে একরাশ মেঘ অলসভাবে শুয়ে আছে পাহাড়ের গায়ে। শহরের মাঝে রয়েছে একখানা সুন্দর লেক, আছে সুন্দর চার্চ। শহর থেকে ৪৫ কিমি দূরে অবস্থিত মাইবং শহর যা সপ্তদশ শতাব্দিতে দিমাসা কাছারি বংশের রাজাদের রাজধানী ছিল এবং এটি ওই অঞ্চলের শিল্প সংস্কৃতির একটি কেন্দ্রস্থল। হাফলং থেকে ১০ কিমি দূরে ‘জাতিঙ্গা’ নামে একটি অঞ্চল এক বিচিত্র ঘটনার জন্য খ্যাতি লাভ করেছিল। সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে দেখা যেত দিনের আলো চলে গিয়ে অন্ধকার হওয়ার সাথে দলে দলে বহিরাগত পাখিরা পাহাড়ের গায়ে আছড়ে পড়ে আত্মহত্যা করছে। যদিও পরবর্তিকালে কিছু NGO অনুসন্ধান করে জানায় যে স্থানীয় মানুষেরা এই পাখির মাংস খাওয়ার লোভে চোখে শক্তিশালী আলো ফেলে তাদের দৃষ্টিশক্তি রহিত করে দিত ফলে তারা পাহাড়ের গায়ে ধাক্কা খেয়ে প্রাণ হারাত। বর্তমানে সরকারি পক্ষথেকে ব্যবস্থা নেওয়ার ফলে এই দুষ্কর্ম বন্ধ হয়েছে।
হাফলং এ আরও আছে ১১৫ কিমি দূরে ‘পানিমুর’ জল্প্রপাত। পাহাড়-জঙ্গলের দুর্গম পথ দিয়ে বয়ে চলেছে ‘কপিলি’ নদী। স্বচ্ছ নদীর জল কোথাও সবুজ আবার কোথাও বা নীল। কখনও উঁচু পাথর থেকে নদী ঝাঁপ দিয়েছে গভীরে, সৃষ্টি হয়েছে জলপ্রপাত। এখানে পাথরের রঙও বৈচিত্র্যময় – কোথাও কালচে, কোথাও লালচে আবার কোথাও হলদেটে। শরত ঋতুতে দেখা যায় নদীর পাড়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে কাশের বন।
হাফলং শহরের অধিবাসী মুলত উত্তরপূর্ব ভারতের আদিবাসী সম্প্রদায়, যেমন– দিমাসা কাছারি,বোড়ো কাছারি, নাগা, কার্বি,খাসি প্রভৃতি, এছাড়া অফিস-কাছারিতে কর্মরত ও ব্যবসায়ী সম্প্রদায় মানুষেরা প্রধানত অসমিয়া, বাঙালি ও নেপালি। এখানে স্বাক্ষরতার হার ৯২ শতাংশ যা সর্বভারতীয় স্বাক্ষরতার হারের প্রায় দ্বিগুণ।
ভ্রমণের সেরা সময়
অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হাফলং ভ্রমণের সেরা সময়।
যাওয়ার উপায়
কলকাতা থেকে গৌহাটি বা শিলচর প্লেনে কিংবা ট্রেনে। সেখান থেকে ট্রেনে অথবা গাড়ি ভাড়া করে নিউ হাফলং। তবে ইদানিং সম্ভবত কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস সরাসরি নিউ হাফলং যায়। এটা একটু কনফার্ম করে নিতে হবে। নিউ হাফ লং স্টেশন থেকে শহরের দূরত্ব ৫ কিমি তাই গাড়ি কিংবা অটো করে নিতে হবে। আশে পাশে ঘোরার জন্য শহর থেকেই গাড়ি পাবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *