বেলাই বিল

blank
সোহাগ পল্লী
October 24, 2020
blank
ছুটি রিসোর্ট
October 24, 2020
Show all

বেলাই বিল

blank

গাজীপুরের বেলাই বিল মনোরম একটি জায়গা। চেলাই নদীর সাথেই বেলাই বিল। এখানে ইঞ্জিন চালিত আর ডিঙ্গি নৌকা দুটোই পাওয়া যায়। যেটাতে ভালো লাগে উঠে পড়ুন। সারাদিনের জন্য ভাড়া করে নিতে পারেন এবং ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিলে নিজেরাই চালিয়ে ঘুরতে পারেন। বিকেলে এই বিলের চারপাশে অপূর্ব দৃশ্য তৈরি হয়, সাথে শাপলার ছড়াছড়ি। শুধু চারিদিক তাকিয়ে থাকবেন। আবার কিছুক্ষণ পরপরই বাতাসের ঝাপটা লাগবে গায়ে। বেশি সময় নিয়ে গেলে অবশ্যই খাবার নিয়ে যাবেন।

বিশাল এই বিলটির কোনো কোনো স্থানে প্রায় সারা বছরই পানি থাকে, তবে বর্ষায় এর রূপ বেড়ে যায় অনেক। বর্তমানে বিলটি আট বর্গমাইল এলাকায় বিস্তৃত হলেও একসময় এটি আরও বড় ছিল। বাড়িয়া, ব্রাহ্মণগাঁও, বক্তারপুর ও বামচিনি মৌজা গ্রামঘেরা বেলাই বিল (Belai Beel)। আজ থেকে ৪০০ বছর আগে বেলাই বিলে কোনো গ্রামের অস্তিত্ব ছিল না। খরস্রোতা চেলাই নদীর কারণে বিলটিও খরস্রোতা রূপে বিরাজমান ছিল। বর্ষা মৌসুমে জেলেরা বিলের চারপাশে মাছ ধরার জন্য ডাঙ্গি খনন করে। আর শুষ্ক মৌসুমে বিলটি হয়ে ওঠে একফসলি জমি। তাতে চাষ হয় বোরো ধান।

পড়ন্ত বেলায় কানাইয়া বাজারের কাছে তৈরি হওয়া নতুন সেতুর ওপর দাঁড়িয়ে চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে সামনে তাকাতেই দেখবেন সব ক্লান্তি উধাও। শাপলা-শালুকে ভরা বেলাই বিলের মোহ দেখে কেবল তাকিয়েই থাকতে মন চাইবে। হয়তো চোখে পড়বে শস্য ঝাড়াইয়ের দৃশ্য! যন্ত্রের সাহায্য ছাড়াই নারীরা এ কাজটি করে। বাতাসে উড়ে তুষের গুঁড়া আর ধুলো। আশপাশের সব চড়ুই পাখিরা, ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা শস্যদানা খুঁটে খুঁটে খায়। ছবির মতো সুন্দর সে দৃশ্য। বিলের বুকে স্বচ্ছ টলটলে পানি! খুব বেশি চওড়া নয় চেলাই নদী, তবে গভীরতা

একেবারে কম নয়। এখানে ইঞ্জিনচালিত আর ডিঙ্গি নৌকা দুটোই পাওয়া যায়। যেটাতে মন চায় উঠে পড়ুন। যেদিকে তাকাবেন কেবলই বেলাই বিলের বিস্তৃত জলরাশি। বিলের চারপাশে দ্বীপের মতো গ্রাম। বামচিনি মৌজা বেলাই বিলের তেমনি একটি দ্বীপগ্রাম। এর বিশেষত্ব এক মৌজায় এক বাড়ি। গাজীপুরে এই বামচিনি মৌজা ছাড়া এমন নজির দেশের অন্য কোথাও আছে বলে জানা নেই। এছাড়াও নদীর পাশে ‘ভাওয়াল পরগণা’ (শ্মশান ঘাট বা শ্মশান বাড়ি) আছে। চাইলে নদীর পাশেই এই শ্মশান বাড়িটি দেখে আসতে পারেন।

কিভাবে যাবেনঃ
গুলিস্তান থেকে বাসে গাজীপুর বাসস্ট্যান্ড। সেখান থেকে রিকশা বা টেম্পোতে কানাইয়া বাজার। কানাইয়া বাজার ঘাটে সারি সারি নৌকা বাঁধা। দরদাম করে উঠে পড়ুন। চাইলে নিজস্ব বাহনেও যেতে পারেন দলবেঁধে। বর্ষাকাল বেলাই ভ্রমণের উপযুক্ত সময়। কানাইয়া বাজারে চা-বিস্কুট ছাড়া অন্য কিছু খাওয়ার ব্যবস্থা নেই। সুতরাং বহনযোগ্য খাবার সঙ্গে নিন। নিজস্ব গাড়িতে টঙ্গী-পুবাইল হয়ে কানাইয়া যেতে সময় বাঁচবে, সঙ্গে যুক্ত হবে মনোরম পথসৌন্দর্য। এক দিনের জন্য দারণ বেড়ানো হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *