Sylhet Tour – Bichanakandi, Ratargul, Panthum

দ্বিতীয় দিন আপনি ২ ধরনের টুর প্ল্যান করতে পারেন। ১) রাতারগুল রেইন ফরেস্ট ঘুরে বিছনাকান্দি, পান্থুমাই, লক্ষনছড়া ঘুরতে পারেন ২) বিছনাকান্দি, পান্থুমাই, লক্ষনছড়া ঘুরতে পারেন। আরেকদিন বেশি সময় নিয়ে রাতারগুল রেইন ফরেস্ট ঘুরে আসতে পারেন।

প্ল্যান ১) রাতারগুল জলা বনঃ খুব ভোরে নাস্তা করে হোটেল থেকে বের হয়ে সিলেট শহরের আম্বর খানা থেকে একটা সিএনজি রিজার্ভ করে মোটর ঘাট (শ্রিংগি ব্রিজ) চলে যাবেন। ভাড়া জনপ্রতি ১০০ টাকা। সিএনজি যাবে খাদিম নগর জাতীয় উদ্যানের ভিতর দিয়ে। মাঝপথে কিছুক্ষনের জন্য থেকে যেতে পারেন। ভোর বেলার বন একটু অন্যরকম। সময় লাগবে ঘন্টা দেড়েক। শ্রিংগি ব্রিজ থেকে ছোট ডিঙি নৌকা ভাড়া করতে হবে। একটি নৌকায় মোটামোটি ৬ জন বসতে পারে। ভাড়া নিবে ৩৫০-৬০০ টাকা। বিট অফিস এর অফিসার কে জানিয়ে এর পর বনে প্রবেশ করবেন একদম নিঃশব্দে। ঘন্টা খানেক জলাবন উপভোগ করে আবার চলে আসবেন মোটর ঘাট। এইবার আপনাকে একটি বড় ট্রলার ভাড়া করতে হবে গোয়াইনঘাট যাওয়ার জন্য। ভাড়া পরবে প্রায় ৭০০-১০০০টাকা। গোয়াইনঘাটে পৌঁছাতে লাগবে প্রায় দেড় থেকে দুই ঘন্টা। গোয়াইনঘাট বাজারেই দুপুরের খাবার খেয়ে নিতে অথবা প্যাক করে নিতে পারেন। এরপর আর খাবার কোন জায়গা পাবেন না। গোয়াইন ঘাট থেকে আপনাকে যেতে হবে হাদারপাড়। গোয়াইন ঘাট বাজার থেকে সিএনজি নিয়ে সহজেই হাদারপাড় যাওয়া যাবে। ভাড়া নিবে জনপ্রতি ৪০ টাকা। হাদারপাড় থেকে পানি কম থাকলে হেঁটেই চলে যেতে পারেন আপনার স্বপ্নের স্বর্গীয় স্থান ‘বিছনাকান্দি’। মাঝে একবার তিন টাকা দিয়ে খেয়া পার করতে হবে।

বর্ষার সময় পানি বেশি থাকলে আর একবারে পান্থুমাই আর লক্ষনছড়া দেখে ফেলতে চাইলে হাদারপাড় থেকে সরাসরি একটা বড় নৌকা রিজার্ভ করে নিলেই ভালো। ‘বিছনাকান্দি-লক্ষনছড়া-পান্থুমাই’ এই তিনটি জায়গা ঘুরিয়ে আনতে নৌকার খরচ পরবে ক্ষেত্র বিশেষে প্রায় ১৫০০-২০০টাকা। লক্ষনছড়া মাঝি চিনে কিনা সেটা আগেই জিজ্ঞেস করে শিওর হয়ে নিবেন। তিনটি জায়গা মোটামোটি ভাবে ঘুরে হাদারপাড় ফিরে আসতে সময় লাগবে প্রায় ৫ ঘন্টা। হাদারপাড় থেকে সরাসরি সিলেট শহরে ব্যাক করতে পারেন। সিএনজি নিবে জনপ্রতি ৮০টাকা। একটি সিএনজি তে ৫ জন বসতে পারে।

প্ল্যান ২) সরাসরি বিছনাকান্দি যেতে হলে সর্বপ্রথম আপনাকে সিলেট নগরীর আম্বরখানা পয়েন্ট যেতে হবে। সেখানে বিমানবন্দর রোডের দিকে সিএনজি স্টেশন আছে। সিএনজি রিজার্ভ করে হাদারপার নামক জায়গা পর্যন্ত গেলে ভাল হয়। পাঁচজন মিলে ১০০০টাকায় সাধারণত ভাড়া নেওয়া হয়। তবে মানুষ কম থাকলে ৮০-২০০ টাকা জনপ্রতিও যাওয়া যায়। হাদারপার বাজারটি খুব একটা বড় না আবার ছোটও না। মোটামুটি সবকিছুই পাবেন। খাবার, পানি, কাপড় সবই কিনতে পাওয়া যায়। হাদারপার বাজারেই বিছনাকান্দি-পান্থুমাই–লক্ষনছড়া যাওয়ার নৌকা পাওয়া যায়। সুন্দর বেশভুষা দেখে মাঝিরা ২০০০টাকা চেয়ে বসতে পারে। ভুলেও রাজি হবেন না। নৌকা ভাড়া আসা-যাওয়া সর্বোচ্চ ১১০০-১৫০০ টাকা হলে ভাল। দরাদরি করে এর চেয়ে কমে পেলে ভাল তবে অবশ্যই এর বেশি দামে যাবেন না। শুকনো মৌসুমে হেঁটে যাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে সময় লাগবে ৩০-৪০ মিনিট। বর্ষাকালে নৌকায় যাওয়াই উত্তম। এক নৌকায় বিছনাকান্দি, পান্থুমাই ও লক্ষনছড়া ঘুরে দেখাবে বলে নিবেন।

বিছনাকান্দি (Bisnakandi) সিলেট শহর থেকে বেশখানিক পথ দূরে। প্রকৃতির আপন লীলাখেলায় মেতে আছে অপার সৌন্দর্যের জলপাথড়ের ভূমি বিছনাকান্দি যা সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবস্থিত! বিছনাকান্দির এখানে-ওখানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে পাথর আর পাথর। মনে হবে যেন একটি পাথরের বিছানা। এ এক অপূর্ব সৌন্দর্য, সারারাত না ঘুমিয়ে এই সৌন্দর্য দেখে নিমিষেই ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে। মেঘালয় রাজ্যের পাহাড় থেকে নেমে আসা ঝর্ণার পানিতে পা ফেলে মনে হবে পৃথিবীর সব শান্তি এখানে। শুকনো মৌসুমে বিছনাকান্দির আসল সৌন্দর্য চোখে পড়ে না। বর্ষাকালে পানির ঢল জায়গাটিকে মায়াময় বানিয়ে তোলে। স্বচ্ছ শীতল পানির তলদেশে পাথরের পাশাপাশি নিজের শরীরের লোমও দেখা যাবে স্পষ্ট। দীর্ঘ সময় জলপাথরের বিছানায় শুয়ে বসে ছবি তুলতে তুলতে আর গোসল করতে হয়তো সময়ের হিসেব হারিয়ে ফেলবেন। বিছনাকান্দি এর সৌন্দর্য অসাধারণ। দৃষ্টির শেষ সীমানা পর্যন্ত শুধু পাথর আর পাহাড়। দূর থেকে দেখলে মনে হয় আকাশ আর মেঘের সাথে পাহাড়ের দলগুলো মিশে আছে। যতোই কাছে যাই পাহাড়গুলোর ততোই আকাশ থেকে যেন দূরে যেতে থাকে। আর পাহাড়ের গায়ে বেপরোয়া সাদা মেঘের দলগুলো যেন আঠার মতো লেগে থাকে।

পাথর, পানি, পাহাড় আর মেঘ নিয়েই যেন বিছনাকান্দি। এখানে যাওয়ার পর যে কথাটি সর্বপ্রথম মনে হবে তা হল প্রশান্তি। এই প্রশান্তিটুকু নিমিষেই ভুলিয়ে দেয় প্রতিদিনকার শত গ্লানি। প্রকৃতির সৌন্দর্যের কাছে যেন হার মানতেই হয় নাগরীক সভ্যতাকে। আর এই চরম সত্যটুকু উপলব্ধি করতে হলে আপনাকে চলে যেতে হবে বিছনাকান্দিতে।


ভাল লাগলে শেয়ার করুন।

সিলেট ভ্রমন টুর তৃতীয় দিন

জইন্তাপুর, জাফলং, তামাবিল ০ পয়েন্ট

ভ্রমনের তৃতীয় পর্বে আপনাদের আমন্ত্রন।

সময়
১ দিন
ভ্রমনের সময়
যে কোন দিন
যাত্রা শুরু
আম্বারখানা
খরচ
৩০০০-৪০০০ টাকা