আমিয়াখুম ঝর্ণা থেকে সামান্য উপরে উঠলেই শুরু হয় ছোট-বড় অনেক পাথর দিয়ে সাজানো পাথুরে রাস্তা। খুব সাবধানতার সাথে রাস্তাটুকু পার করার পরে সামনে পড়বে বিশাল আকৃতির পাথরের পাহাড় আর তার মাঝে সবুজ, শান্ত, স্বচ্ছ জলধারা। আর এখান থেকে শুরু সাতভাইখুম। এই পথটুকু যেতে হবে বাঁশের ভেলায় করে। অর্থ্যাৎ সাতভাইখুম এর এই জলপথটুকু পাড়ি দিতে ভেলায় চড়তেই হবে। ভেলায় চড়ে যাত্রা শুরুর পরে মনে হবে – হঠাৎ যেন কোন পাথুরে দুর্গে প্রবেশ করলেন। এবার শুধু বাকরুদ্ধ অবাক মুগ্ধ চোখে দেখার পালা আর সেই সাথে অনুভব হবে – দু’পাশের আকাশছোঁয়া পাথরের পাহাড় যেন গাম্ভীর্য নিয়ে আপনাকে স্বাগত জানাচ্ছে। সবুজ অরণ্য তাদের রাজ্যে আপনাকে আলিঙ্গন করে স্বাগতম জানাচ্ছে আর সবুজ টলটলে জলপথ যেন সংবর্ধনা দিচ্ছে আপনাকে। সাতভাইখুম (Satvaikhum) এর রুপ-সৌন্দর্যের বিবরন দিতে সকল উপমা ব্যবহার করলেও হয়তো এর সৌন্দর্য বর্ণনায় শব্দের কমতি হবে। সাতভাইখুমের সবুজ অরন্য, জলপাথরের গিরিপথ আর পাথুরে পাহাড়ী রাজ্য থেকে ফেরার পথে আপনার সঙ্গী হবে অনেক দুরন্ত, দুর্গম আর ভয়ানক রোমাঞ্চকর ভ্রমনের দারুন এক অনুভুতি।
সাতভাইখুম বলতে আপনাকে বাঁশের ভেলায় করে দুই পাথরের পাহাড়ের মাঝখানের সরু জলধারায় ঘুরিয়ে নিয়ে আসবে। যাওয়া আসায় ৫০ মিনিট মত লাগে। এখানের সবুজ টলমলে পানি দেখে নামতে ইচ্ছে হতে পারে কিন্তু না নামাই শ্রেয়। এখানে পানির গভীরতা অনেক।
যাওয়ার উপায়
বান্দরবানে পৌঁছে সোজা চলে যাবেন থানচিতে। সেখান থেকে নৌকা নিয়ে থামবেন রেমাক্রিতে। এরপর আর কোনো গাড়ি যাবে না, পায়ের ওপরে ছেড়ে দিতে হবে শহুরে হাওয়ায় পেলে পুষে বড় করা শরীরটাকে। চলতি পথে নাফাখুম পড়বে, সেখান থেকে যেতে হবে জিন্নাপাড়া। সেখানে রাতে থেকে পরদিন খুব ভোরে আমিয়াখুম আর সাতভাইখুম এর দিকে হাঁটা দেবেন। সঙ্গে করে রশি, লাইফ জ্যাকেট আর খাবার নিয়ে যাবেন। ফিরে আসার পথে পদ্মমুখ রাস্তা দিয়ে ফেরত আসতে পারেন।
খরচ আমিয়াখুম, সাতভাইখুম ও ভেলাখুম ভালোভাবে ঘুরে আসতে চার দিন লেগে যাবে। শুধু থানচি থেকে সব ঘুরে আবার থানচিতে ফেরত আসতে মাথাপিছু মোট খরচ হবে সাড়ে চার হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকার মত। এই জায়গা অনেক দুর্গম তাই ভারী জিনস আর ট্রলি ব্যাগ না নিয়ে যাওয়াই ভালো।
WhatsApp us