শুরু করছি মহান সৃষ্টিকর্তার নামে যিনি পরম করুণাময় এবং অসীম দয়ালু।
বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট কিংবা ইলেকট্রনিক পাসপোর্টের কার্যক্রম ২০১৯ সালের জুলাই মাসে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বেশ কয়েক দফা পেছানোর পর অবশেষে ২০২০ সালের ২২শে জানুয়ারি এই কর্মসূচীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়। উদ্বোধনের পর থেকেই ই-পাসপোর্টের আবেদনসহ যাবতীয় সকল বিষয় নিয়ে অনেকেই দ্বিধা দ্বন্দ্বে ভুগছেন। ভোগাটাও স্বাভাবিক কারণ, ই-পাসপোর্ট সংক্রান্ত সুস্পষ্ট তথ্য আমরা সব জায়গায় পাই না। দেখা যায়, এ সকল যাবতীয় তথ্যের জন্যে আমাদের একমাত্র সোশ্যাল মিডিয়ার উপরেই নির্ভর থাকতে হয় যেখানে মানুষজনের ভিন্ন ভিন্ন অভিজ্ঞতার কারণে আমরা সঠিক তথ্যটি না পেয়ে বেশ বিভ্রান্তিতে থাকি।তাই আমার এই পোস্টের উদ্দেশ্য থাকবে আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসের ই-পাসপোর্ট সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যগুলো ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে সবার মাঝে তুলে ধরার এবং খুঁটিনাটি সকল বিভ্রান্তি দূর করার।তবে এই পোস্টটি সবচেয়ে উপকারী হবে তাদের জন্যে, যারা কিনা সম্পূর্ণ নিজ উদ্যোগে, কোনো দালালের সাহায্য ছাড়া, সম্ভাব্য তারিখের মধ্যেই জীবনের প্রথম পাসপোর্ট এবং ই-পাসপোর্ট হাতে পেতে চান।
আমার ই-পাসপোর্ট জার্নিঃ 48 pages, 10 years.পাসপোর্ট টাইপঃ ORDINARY | ডেলিভারী টাইপঃ REGULAR | Account Create: 16th September 2020 | Application Submitted: 16th September 2020 | Enrollment Completed: 23rd September 2020 | Enrolled, Pending Approval: 23rd September to 6th October 2020 | Approved: 6th October 2020 | Passport Shipped: 7th October 2020 | Passport Received: 8th October 2020Tentative Collection Date: 14th October 2020
২১ দিনের পাসপোর্ট ১৫ দিনেই হাতে, আলহামদুলিল্লাহ!ই-পাসপোর্ট হাতে পাওয়ার ধাপ সমূহঃ
১. অনলাইনে আবেদন এবং অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়া। ২. পেমেন্ট। ৩. অ্যাপয়েন্টমেন্ট অনুযায়ী সকল ডকুমেন্টসহ নিজ নিজ পাসপোর্ট অফিসে উপস্থিত হয়ে সেগুলো জমা দিয়ে, ছবি তোলা, বায়োমেট্রিকসহ যাবতীয় সকল কাজ শেষ করে ডেলিভারি স্লিপ নিয়ে আসা। ৪. পুলিশ ভেরিফিকেশন। ৫. পাসপোর্ট হাতে পাওয়া।
কোন কোন ব্যাংক ই-পাসপোর্টের ফি জমা নেয়ঃ ১. ওয়ান ব্যাংক২. ব্যাংক এশিয়া ৩. সোনালী ব্যাংক ৪. প্রিমিয়ার ব্যাংক ৫. ট্রাস্ট ব্যাংক ৬. ঢাকা ব্যাংক
ই-পাসপোর্টের যাবতীয় ফিঃ ৪৮ পেইজ, মেয়াদঃ ৫ বছর। রেগুলারঃ ৪,০২৫ টাকা, ২১ কার্য দিবসে। এক্সপেসঃ ৬,৩২৫ টাকা, ১০ কার্য দিবসে।স ুপার এক্সপ্রেসঃ ৮,৬২৫ টাকা, ২ কার্য দিবসে।
৪৮ পেইজ, মেয়াদঃ ১০ বছর। রেগুলারঃ ৫,৭৫০ টাকা, ২১ কার্য দিবসে। এক্সপেসঃ ৮,০৫০ টাকা, ১০ কার্য দিবসে। সুপার এক্সপ্রেসঃ ১০,৩৫০ টাকা, ২ কার্য দিবসে।
৬৪ পেইজ, মেয়াদঃ ৫ বছর। রেগুলারঃ ৬,৩২৫ টাকা, ২১ কার্য দিবসে। এক্সপেসঃ ৮,৬২৫ টাকা, ১০ কার্য দিবসে। সুপার এক্সপ্রেসঃ ১২,০৭৫ টাকা, ২ কার্য দিবসে।
৬৪ পেইজ, মেয়াদঃ ১০ বছর। রেগুলারঃ ৮,০৫০ টাকা, ২১ কার্য দিবসে। এক্সপেসঃ ১০,৩৫০ টাকা, ১০ কার্য দিবসে। সুপার এক্সপ্রেসঃ ১৩,৮০০ টাকা, ২ কার্য দিবসে।
ই-পাসপোর্টের জন্যে কি কি কাগজপত্র প্রস্তুত রাখা অত্যাবশ্যকীয়ঃ
মূল কপিঃ ১. নিজের জাতীয় পরিচয় পত্র ২. নিজের স্টুডেন্ট কিংবা জব আইডি (আবেদনের সময় প্রোফেশন “ছাত্র” দিয়ে থাকলে আপনাকে স্টুডেন্ট আইডি প্রদর্শন করতে হবে, “চাকুরীজীবী” দিয়ে থাকলে জব আইডি) ৩. নাগরিক সনদ/প্রত্যয়ন পত্র (স্থায়ী এবং অস্থায়ী এই দুই ঠিকানা থেকেই আপনাকে সেই এলাকার কাউন্সিলর কিংবা চেয়ারম্যানের কাছ থেকে এই নাগরিক সনদ/প্রত্যয়ন পত্র সংগ্রহ করতে হবে। এই নাগরিক সনদ/প্রত্যয়ন পত্র সংগ্রহনের জন্যে আপনাকে আপনার এনআইডি কার্ডের এক কপি ফটোকপি এবং স্থায়ী/অস্থায়ী ঠিকানার বিদ্যুৎ বিলের এক কপি ফটোকপি সাথে করে নিয়ে কাউন্সিলর কিংবা চেয়ারম্যানের অফিসে যেতে হবে। সকালে কাগজপত্র জমা দিলে বিকেলের মধ্যেই সনদ হাতে পেয়ে যাবেন।
এই সনদের জন্যে কোনোরকম আর্থিক লেনদেনের প্রয়োজন হয় না।
ফটোকপিঃ ১. নিজের জাতীয় পরিচয় পত্র। ২. নিজের স্টুডেন্ট কিংবা জব আইডি। ৩. এসএসসি সার্টিফিকেট। ৪. এইচএসসি সার্টিফিকেট। ৫. নাগরিক সনদ/প্রত্যয়ন পত্র। ৬. বাবার জাতীয় পরিচয় পত্র। ৭. মা’র জাতীয় পরিচয় পত্র। ৮. ইউটিলিটি বিল (বিদ্যুৎ/ওয়াসা/টেলিফোন) তবে বিদ্যুৎ বিলটাই সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য। ৯. খতিয়ান কিংবা সিটি করপোরেশনের ট্যাক্স পেমেন্টের রশিদ। (ভূমি জরিপকালে ভূমি মালিকের মালিকানা নিয়ে যে বিবরণ প্রস্তুত করা হয় তাকেই মূলত খতিয়ান বলে। যাদের স্থায়ী ঠিকানায় নিজেদের বাড়ি আছে তাদের কাছ থেকে এই খতিয়ান কিংবা সিটি করপোরেশনের ট্যাক্স পেমেন্টের রশিদের এক কপি ফটোকপি পুলিশ ভেরিফিকেশনের সময় প্রয়োজন হবে)
সাজেশনঃ সবগুলোরই একাধিক কপি সাথে রাখবেন, যে কোন সময়ই কাজে লাগতে পারে।
কিভাবে অনলাইন আবেদন করবেনঃ
১. প্রথমে ই-পাসপোর্টের ( https://epassport.gov.bd/ ) এই ওয়েবসাইটে ঢুকে আপনাকে “Apply Online for e‑Passport / Re‑Issue” অপশনটির নিচে থাকা “Directly to online application” এ ক্লিক করে সেখানে যাবতীয় তথ্য ইনপুট দেওয়ার পর আপনার ই-মেইলে একটি কনফার্মেশন মেইল যাবে। সেই মেইলে একটি অ্যাকটিভেশন লিংক দেওয়া থাকবে যাতে ক্লিক করার পর আপনার অ্যাকাউন্টটি অ্যাকটিভ হবে এবং এপ্লাই করার জন্য প্রস্তুত হবে। মেইলটি ইনবক্সে খুঁজে না পেলেও “জাংক/স্প্যাম” ফোল্ডারে পেয়ে যাবেন।
সাজেশনঃ ধরুন, আপনি অ্যাকাউন্ট খুললেন কিন্তু এপ্লাই করলেন না, সেক্ষেত্রে তাদের ওয়েবসাইটে বলা আছে আপনার একাউন্টটি ২১ দিন পর অটোমেটিক্যালি ডিলিট হয়ে যাবে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটি হয় না। দেখা যায়, আপনার অ্যাকাউন্ট ডিলিট হয়ে গেলেও আপনার দেওয়া সকল তথ্য তাদের সার্ভারে থেকে যায়। অর্থাৎ সেই তথ্যগুলো (এনআইডি নাম্বার, মোবাইল নাম্বার, ই-মেইল) ব্যবহার করে আপনি নতুন করে আর কোনো অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন না এবং আবেদন করতে পারবেন না। এইক্ষেত্রে আপনার অ্যাকাউন্টটি ডিলিট করতে আপনাকে পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে আলাদাভাবে আবেদন দাখিল করতে হবে। তাই সাজেশন থাকবে কেবলমাত্র আবেদন করতে চাইলেই সকল তথ্যগুলো দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলবেন। আবেদন করার মেন্টালিটি না থাকলে অযথা অ্যাকাউন্ট খুলে নিজের বিপদ ডেকে আনবেন না।
২. এরপর এক এক করে নির্ভুলভাবে সকল তথ্য দিয়ে আপনার আবেদন সম্পন্ন করতে হবে।
সাজেশনঃ আবেদন করার পূর্বে ইউটুব থেকে ১-২ টি টিউটোরিয়াল দেখে অ্যাপ্লিকেশন সাবমিট করবেন। এটি আপনাকে নির্ভুল অ্যাপ্লিকেশন সাবমিট করতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি হুবাবু এনআইডি অনুসরণ করে সকল তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করবেন, “ডট” থেকে শুরু করে “ঠিকানা”পর্যন্ত যা যা আছে সব কিছুই। এতে আপনার পাসপোর্ট করা খুবই সহজ হয়ে যাবে।
দুটি ভালো টিউটোরিয়ালের লিঙ্ক দিলামঃhttps://www.youtube.com/watch?v=gTT9frWc7AY&t=130s…https://www.youtube.com/watch?v=J8ce9Wsth1s&t=685s…
৩. আবেদন সম্পন্ন করার পরের ধাপ হচ্ছে পেমেন্ট সিলেকশন। পেমেন্ট সিলেকশনের ক্ষেত্রে আপনি দুটি অপশন পাবেন, একটি “অনলাইন পেমেন্ট” যেটি আপাতত বন্ধ আছে। আরেকটি “অফলাইন পেমেন্ট” অর্থাৎ আপনাকে ব্যাংকে গিয়ে পেমেন্ট সম্পন্ন করতে হবে।
সাজেশনঃ আমার ব্যাক্তিগত সাজেশন থাকবে, অফলাইন পেমেন্ট সিলেক্ট করে ব্যাংকে গিয়ে টাকা জমা দিয়ে আসুন।
৪. পেমেন্ট সিলেকশনের পরের ধাপ হচ্ছে “এপয়েন্টমেন্ট নেওয়া”। অর্থাৎ আপনি কোন দিন, কোন সময়ে পাসপোর্ট অফিসে উপস্থিত থেকে সকল কাগজপত্র জমা দিতে চান সেটির একটি এপয়েন্টমেন্ট নেওয়া লাগে।
সাজেশনঃ ধরুন, আপনি ২০ অক্টোবর এপয়েন্টমেন্ট নিলেন দুপুর ১ টা ৩০ মিনিটে। আপনার RPO যদি আগারগাঁও হয়ে থাকে তাহলে বলবো সেখানে শুধুমাত্র ডেট ম্যাটার করে, টাইম ম্যাটার করে না। অর্থাৎ, আপনি যদি ২০ অক্টোবর এপয়েন্টমেন্ট নিয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে ২০ অক্টোবরেই উপস্থিত থাকতে হবে। আপনি কোনোভাবে ১৯ অক্টোবরে কাগজপত্র জমা দিতে পারবেন না। কিন্তু আপনার এপয়েন্টমেন্ট টাইম যদি ২০ অক্টোবর দুপর ১ টা ৩০ মিনিটে হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে আপনি ২০ অক্টোবর যে কোনো টাইমেই সেটি জমা দিতে পারবেন। যেমন, আমার এপয়েন্টমেন্ট টাইম ছিলো দুপুর ১ টা ৩০ মিনিটে কিন্তু আমি সেখানে উপস্থিত হই সকাল ৯ টায় এবং সব কাজ শেষ করে বের হই দুপুর ১২ টা ৩০ মিনিটে। তবে আপনি যদি কোনোভাবে ভীড়ের কারণে ২০ অক্টোবরে কাগজপত্র জমা দিতে ব্যর্থ হন সেক্ষেত্রে আপনি পরের দিন এসে কাগজপত্র জমা দিতে পারবেন।
৫. অ্যাপ্লিকেশন সাবমিটের পর আপনার সামনে “Print Summary” এবং “Download Application Form for Printing” নামক দুটি অপশন আসবে। এই ফাইল দুটি ডাউললোড করে রেখে দিবেন।
সাজেশনঃ আপনার ড্রাইভে পিডিএফ ফাইল দুটি আপলোড করে ব্যাকাপ হিসেবে রাখতে পারেন। বিপদের সময় কাজে আসবে।
আবেদন করার সময় আমি নিজে যেসব কনফিউশনে ভুগেছিঃ
১. Given Name এবং Surname: এটি অনেক কমন একটি কনফিউশন। সহজ বাংলায় যদি বলতে চাই তাহলে বলবো, “Given Name” হচ্ছে আপনার নামের “প্রথম অংশ” এবং “Surname” হচ্ছে আপনার নামের শেষের অংশ। অর্থাৎ, আপনার নাম যদি হয়ে থাকে “Asad Uz Zaman” তাহলে আপনার “Given Name” হবে “Asad Uz” এবং “Surname” হবে “Zaman”। কিংবা আপনার নাম যদি “Abdur Rahman” হয়ে থাকে তাহলে আপনার “Given Name” হবে “Abdur” এবং “Surname” হবে “Rahman” ২. Given Name (Optional): আবেদন করার সময় লক্ষ্য করলে দেখবেন তারা “Given Name” অর্থাৎ নামের প্রথম অংশের জায়গাটায় অপশনাল রেখেছে। তাদের ভাষ্যমতে, আবেদনের সময় আপনি আপনার নামের প্রথম অংশ ফিলাপ না করলেও আপনার আবেদনটি গ্রহণ হবে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, এই “Given Name” ফিলাপ করা অত্যাবশ্যকীয়। আপনি যদি “Given Name” এর অংশটি ফাঁকা রাখেন তাহলে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাবে এই ভুলের কারণে আপনার বেশ ঝামেলা পোহাতে হবে। তাই সাজেশন থাকবে “Given Name” অপশনাল হলেও অবশ্যই অবশ্যই তা ফিলাপ করবেন।৩. City/Village/House: এই অপশনটিতে অনেকেই ভুল করে বাসার ঠিকানা না দিয়ে নিজের জেলার নাম লিখে ফেলেন। এই ভুল কখনোই করবেন না। এই অপশনটি দেওয়া হয়েছে আপনার বাসার ঠিকানা লিখার জন্যে। আপনার বাসার যদি কোনো স্পেসিফিক “Road/Block/Sector” নাম্বার দেওয়া না থাকে তাহলে “City/Village/House” এই অপশনটিতে আপনার বাসার ঠিকানা সুন্দর করে স্পষ্ট করে ফিলাপ করবেন।৪. Guardian Name: ফর্মে যদি বাবা-মায়ের সকল তথ্য দিয়ে থাকেন তাহলে আর গার্ডিয়ান নেম ফিলাপ করার প্রয়োজন নেই।৫. Name or Address issue: আবেদন সম্পূর্ণ করার পর যখন অ্যাপ্লিকেশন ফর্মের পিডিএফটা ওপেন করি তখন দেখতে পাই আমার গার্ডিয়ান নেইম একটু বড় হওয়ার কারণে ফর্মে সেটির অর্ধেক উল্লেখ হয় নি। এইরকম কেসে ঘাবড়ানোর কিছু নেই, আপনি যদি সঠিকভাবে সকল তথ্য দিয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনার ফর্মের বারকোড স্ক্যান করলেই আপনার অনলাইন আবেদনের সকল তথ্য সেখানে নির্ভুল্ভাবে পাওয়া যাবে। ঠিকানার ক্ষেত্রেও সেইম। প্রিন্টেবল ফর্মে জায়গা সংকটের কারণে এরকমটা হয়ে থাকে কিন্তু তাদের সার্ভারে আপনার ইনপুট দেওয়া সকল তথ্যগুলোই থাকে যায়।৬. অ্যাপ্লিকেশন ফাইনাল সাবমিশনের আগে তারা আপনাকে একটি ওভারভিউ দেখাবে যেখানে আপনি চাইলে আপনার তথ্যগুলো পুনরায় এডিট করতে পারবেন কিন্তু সাজেশন থাকবে সেখানে কোনো প্রকার এডিট করতে যাবেন না। কারণ অনেকেরই দেখলাম এডিট করার পরেও তাদের ফর্মে তথ্যের কোনো চেইঞ্জ হয় নি। তাই চেষ্টা করবেন প্রথম সাবমিশনেই প্রত্যেকটি তথ্য নির্ভুল্ভাবে দেওয়ার এবং সাবমিশনের আগে তথ্যগুলো বার বার চেক করে নেয়ার।
ই-পাসপোর্টের ফি জমা দেওয়াঃ ই-পাসপোর্টের ফি জমা দেওয়া বেশ সহজ একটি কাজ। আমি ব্যাংক এশিয়াতে জমা দিয়েছিলাম। ব্যাংকে ঢুকেই গার্ডদের জিজ্ঞেস করার পর তারা আমাকে একটি “Deposit Slip” ধরিয়ে দেয় যেখানে কিনা “Passport fees for MRP” লিখা ছিলো। কনফিউশন দূর করতে তাদের এক কর্মচারীকে জিজ্ঞেস করার পর জানতে পারি ব্যাংক এশিয়াতে “e-Passport” এবং “MRP” এর জন্যে একই ডিপোসিট স্লিপ। জাস্ট ফি জমার দেওয়ার মুহূর্তে তাদেরকে স্পষ্ট করে বলে নিবেন আপনি “ই-পাসপোর্ট”এর জন্যে ফি জমা দিচ্ছেন। তবে ফি জমা দেওয়ার সময় নাকি অনেকের কাছেই ই-পাসপোর্টের অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম দেখতে চেয়েছে কিন্তু আমার কাছে তা চায় নি। আমার কাছ থেকে তারা ফি’র সাথে এনআইডি কার্ডের এক কপি ফটোকপি রেখেছে। সবশেষ পেমেন্ট রিসিট নিয়ে বাসায় চলে আসলাম।পেমেন্ট রিসিপটের ২ টি অংশ থাকবে, ১. “Applicant’s Copy” এবং ২. “PP Office Copy”। “Applicant’s Copy” টি ছিঁড়ে নিজের কাছে রেখে দিবেন এবং “PP Office Copy” টি অ্যাপ্লিকেশন ফর্মের সাথে রেখে দিবেন। এটি এপয়েন্টমেন্টের দিন সাথে নেওয়া বাঞ্ছনীয়।
সাজেশনঃ ব্যাংকে ফি জমা দেওয়ার সময় ই-পাসপোর্ট অ্যাপ্লিকেশন ফর্মের এক কপি, নিজের এনআইডি কার্ডের এক কপি ফটোকপি এবং মূল এনআইডি সাথে রাখবেন।
অ্যাপয়েন্টমেন্টের দিন কি কি সাথে নিবেন এবং কিভাবে নিবেন?
কি কি সাথে নিবেনঃ ১. অবশ্যই “প্রিন্ট সামারি” (কালার প্রিন্ট, যেন বারকোড স্পষ্ট দেখা যায়, যেখান থেকে প্রিন্ট করাবেন সেখানে বলে নিবেন লেজার কালার প্রিন্ট করাতে চাই যেন বারকোড দেখা যায়)। ২. ই-পাসপোর্টের অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম (কালার প্রিন্ট, যেন বারকোড স্পষ্ট দেখা যায়, যেখান থেকে প্রিন্ট করাবেন সেখানে বলে নিবেন লেজার কালার প্রিন্ট করাতে চাই যেন বারকোড দেখা যায় এবং চেষ্টা করবেন ফর্মটা উভয় পেইজে প্রিন্ট করতে অর্থাৎ ২টি A4 সাইজ পেইজের মধ্যে ৩ পেইজ অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম)। ৩. ব্যাংক থেকে সংগ্রহ করা পেমেন্ট রিসিপ্ট।মূল কপিঃ১. নিজের জাতীয় পরিচয় পত্র২. নিজের স্টুডেন্ট কিংবা জব আইডি৩. নাগরিক সনদ/প্রত্যয়ন পত্র ৪. অনলাইন অ্যাপ্লিকেশনে্র সময় যদি বাবা-মা-গার্ডিয়ান অথবা ঠিকানায় কোনো প্রকার ভূল করে থাকেন সেক্ষেত্রে সেগুলো সঠিক প্রমাণ করে সংশোধনের জন্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের মূল এবং ফটোকপি।ফটোকপিঃ ১. নিজের জাতীয় পরিচয় পত্র। ২. নিজের স্টুডেন্ট আইডি কিংবা জব আইডি। ৩. নাগরিক সনদ/প্রত্যয়ন পত্র। ৪. ইউটিলিটি বিল (বিদ্যুৎ/ওয়াসা/টেলিফোন) তবে বিদ্যুৎ বিলটাই সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য। এখানে, কয় মাস আগের বিদ্যুৎ বিল দেখাতে হবে এমন কোনো নিয়ম নেই, আমি ২০১৭ সালের এক কপি দেখিয়েছিলাম কারণ ২০১৮ সাল থেকেই আমাদের বাসায় কার্ড সিস্টেমে বিদ্যুৎ বিল পে করতে হয়। তবে ব্যাকআপ হিসেবে ওয়াসা কিংবা টেলিফোনের রিসেন্ট এক কপি বিল সাথে রাখতে পারেন।
কিভাবে নিবেন?
এই সেকশনটায় বেশ কিছু তথ্য জানার আছে। এগুলো যদি বাসা থেকেই ঠিকঠাক করে যেতে পারেন তাহলে পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে অযথা এদিক ওদিক দৌড়াদৌড়ি করতে হবে না।১. ব্যাংক থেকে সংগ্রহ করা আপনার পেমেন্ট রিসিপ্টের “PP Office Copy” টি ই-পাসপোর্ট অ্যাপ্লিকেশন ফর্মের ডান পাশে একদম উপরে আঠা দিয়ে লাগাবেন, আই রিপিট আঠা দিয়ে। অনেকেই স্ট্যাপ্লার মেরে জমা দিয়েছে তবে আঠা দিয়ে লাগানোটাই সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য।২. (প্রিন্ট সামারি – ই-পাসপোর্টের অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম – নিজের জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি – নিজের স্টুডেন্ট কিংবা জব আইডি কার্ডের ফটোকপি – বিদ্যুৎ বিলের ফটোকপি) বাম থেকে ডানে, অর্থাৎ সর্ব বামে যেটি আছে সেটি হবে সবার উপরে, এই ক্রমে সকল ডকুমেন্টসগুলো একসাথে স্ট্যাপল করে নিয়ে যাবেন, আপনার বেশখানেকটা সময় বাঁচবে। ৩. অ্যাপ্লিকেশন ফর্মের “৩ নাম্বার” পেইজের একদম নিচে “Signature of Applicant” ঘরে আপনার এনআইডি অনুযায়ী নিজ হাতে বলপেন দিয়ে সিগনেচার করবেন এবং পাশে থাকা “Date” ঘরে অ্যাপয়েন্টমেন্ট ডেটের তারিখটি বসিয়ে নিবেন।
মিশন পাসপোর্ট অফিসঃ এবার হচ্ছে আপনার ই-পাসপোর্ট করার মূল ধাপ অর্থাৎ পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে সকল ডকুমেন্টস জমা দিয়ে বায়োমেট্রিক সম্পন্ন করে আসা। আমার RPO যেহেতু আগারগাঁও ছিলো সেহেতু চেষ্টা করবো আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসের সকল খুঁটিনাটি তথ্যাদি সরবরাহ করার।১. প্রথম ধাপঃ প্রথম ধাপে আপনাকে গেটে ঢুকেই লাইনে দাঁড়িয়ে যেতে হবে। “MRP” এবং “E-Passport” এর জন্যে লাইন একই সুতরাং কনফিউজড না হয়ে সামনে থাকা লাইনে দাঁড়িয়ে যাবেন। লাইন এগোতে এগোতে সামনে পাবেন একটি ডেস্কবক্স যেখানে আপনার সকল ডকুমেন্টস চেক করার পর আপনার ফর্মে “DHAKA RPO INTRANCE, তারিখ এবং একটি নাম্বার” সম্বলিত সিল দিয়ে আপনাকে পাশের রুমে যেতে বলবে।
সাজেশনঃ এই জায়গাটায় সাধারণত বেশ গরম থাকে এবং সকালের দিকে প্রচুর ভীড় থাকে। সুতরাং, যাদের গরম সহ্য হয় না তারা সাথে করে একটি হাত পাখা নিয়ে আসবেন এবং যারা এই লাইনের ভীড় এড়াতে চান তাদের জন্যে সকালে না আসাটাই উত্তম। চেষ্টা করবেন লাঞ্চ টাইমের আগে আসার, তখন এই জায়গাটা পুরোটাই ফাঁকা থাকে।
২. দ্বিতীয় ধাপঃ এই ধাপটি হচ্ছে সবচেয়ে ফালতু এবং কষ্টকর ধাপের মধ্যে একটি। আপনাকে যে পাশের রুমে যেতে বলবে সে রুমটির কাউন্টারের উপর দুটো নাম্বার দেখতে পাবেন যার প্রথমটি “১০৩”এবং দ্বিতীয়টি “১০৬”। “১০৬”নাম্বার নিয়ে আপনার মাথা ব্যাথার কোনো প্রয়োজন নেই কারণ সেটি “MRP” পাসপোর্ট এর জন্যে। আপনাকে “১০৩” নাম্বার কাউন্টারের “পুরুষ”কিংবা “মহিলা” লাইনে দাঁড়াতে হবে। যেখানে আপনার সকল ডকুমেন্টসের সাথে জাতীয় পরিচয় পত্রের মূলকপি এবং স্টুডেন্ট/জব আইডি কার্ডের মূলকপির সকল তথ্য যাচাই করার পর আপনার ফর্মে “Assistant Director” কর্তৃক একটি সিল এবং “আবেদিত”সিল দিয়ে আপনাকে “৩০৮” নাম্বার রুমে পাঠানো হবে।
সাজেশনঃ এই জায়গাটিতে সর্বোচ্চ ৩০ থেকে ৬০ মিনিটের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার কথা অথচ এই জায়গায় তাদের কাজের ধীরগতির কারণে আমাকে ৩ ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। পাশাপাশি এখানকার এসির অবস্থা খুবই বাজে তাই হাতের কাছে একটি হাত পাখা এবং এক বোতল পানি রাখলে কষ্টের পরিমাণ কিছুটা হলেও কমবে।
৩. তৃতীয় ধাপঃ “৩০৮” নাম্বার মূলত কোনো রুম নয়, এটি ৩য় তলায় সিড়ির পাশে রাখা একটি ডেস্ক যেখানে একজন আর্মি আপনার ফর্মে একটি সিরিয়াল নাম্বার এবং একটি রুম নাম্বার লিখে দিবে। এই সিরিয়াল নাম্বার অনুসারে, ফর্মে লিখিত রুম নাম্বারে আপনার ছবি তোলা সহ যাবতীয় সকল বায়োমেট্রিক সম্পন্ন করা হবে। আমার ক্ষেত্রে রুম নাম্বার ছিলো “৫০৩”। অনেকের ক্ষেত্রে সেই রুম নাম্বার ছিলো “৪০৩”।
সাজেশনঃ এখানে আগে আগে উপস্থিত থাকার চেষ্টা করবেন। কারণ, এখান থেকে যত দ্রুত সিরিয়াল নিতে পারবেন, আপনার বায়োমেট্রিকের কাজও তত দ্রুত শেষ হবে।
৪. চতুর্থ ধাপঃ এই ধাপে দেখা পাবেন পুরো পাসপোর্ট অফিসের সবচেয়ে সাপোর্টিভ মানুষজনদের। “৫০৩”অথবা “৪০৩” নাম্বার রুমে আপনার ছবি তোলাসহ সকল বায়োমেট্রিক (ফিংগারপ্রিন্ট, আইরিশ স্ক্যান, সিগন্যাচার) কাজ সম্পন্ন করা হবে। আপনার অ্যাপ্লিকেশন ফর্মে করা যেকোনো ধরনের ভুল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে আপনি এখান থেকে সংশোধন করে নিতে পারবেন। এরপর আপনার সকল ডকুমেন্টস এখানে স্ক্যান করা হবে। সকল কাজ শেষে আপনাকে একটি ডেলিভারী স্লিপ দিয়ে বলা হবে সকল তথ্য ঠিক আছে কিনা তা যাচাই করে দেখতে। যাচাই করার পর সেখানে দুই জায়গায় আপনার সিগনেচার নিয়ে তারা নিজেদের কাছে অফিস কপি রেখে আপনাকে আপনার ডেলিভারী স্লিপ দিয়ে দিবে, যেটি প্রদর্শনের মাধ্যমে আপনি আপনার তৈরী হওয়া পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে পারবেন।
সাজেশনঃ প্রথমত, সাদা এবং হালকা রঙের সকল পোষাক, টুপি, চশমা, ক্যাপ, কপালে টিপ ইত্যাদি পরে ছবি তোলা যাবে না। কালারফুল জামা পরে গেলে ছবি ভালো আসবে। মনে রাখবেন ছবি তোলার চান্স একবারই, সুতরাং, চেষ্টা করবেন সেই মুহূর্তে নিজেকে যতটা পারফেক্টভাবে তুলে ধরা যায়। দ্বিতীয়ত, ডেলিভারী স্লিপটি মনোযোগ সহকারে চেক করবেন এবং স্লিপে কোনোরকম ভুল লক্ষ্য করলে সাথে সাথে অপারেটরদের জানাবেন। তা না হলে আপনার পাসপোর্টে ভুল তথ্য চলে আসবে। তৃতীয়ত, এই রুমের সকল কাজ শেষ করার পর ১০ থেকে ১৫ মিনিট পাসপোর্ট অফিসে অবস্থান করে চেক করবেন আপনার মোবাইল নাম্বারে “Your enrollment has been successfully completed” লিখা কোনো মেসেজ এসেছে কিনা। যদি না এসে থাকে, তাহলে আবারো সেই রুমে গিয়ে তাদেরকে বিষয়টা জানাবেন কারণ গ্রুপে অনেকেরই দেখলাম এই প্রব্লেমটির জন্যে ফের পাসপোর্ট অফিসে যেতে হয়েছে, যেখানে আপনি রুম থেকে বের হওয়ার আগেই এই মেসেজটি আপনার মোবাইল ফোনে চলে আসার কথা। আমার ক্ষেত্রে মেসেজটি ২ মিনিটেই চলে এসেছিলো সুতরাং, এই বিষয়টি মাথায় রাখবেন।
এর মাধ্যমেই পাসপোর্ট অফিসের সকল কাজ শেষ। ডেলিভারী স্লিপ নিয়ে বাসায় চলে যান।
পুলিশ ভেরিফিকেশনঃ যেসব কাগজপত্র প্রস্তুত রাখতে হবে (ফটোকপি) :১. নিজের জাতীয় পরিচয় পত্র।২. নিজের স্টুডেন্ট কিংবা জব আইডি।৩. এসএসসি সার্টিফিকেট।৪. এইচএসসি সার্টিফিকেট।৫. নাগরিক সনদ/প্রত্যয়ন পত্র।৬. বাবার জাতীয় পরিচয় পত্র।৭. মা’র জাতীয় পরিচয় পত্র।৮. ইউটিলিটি বিল (বিদ্যুৎ/ওয়াসা/টেলিফোন) তবে বিদ্যুৎ বিলটাই সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য।৯. খতিয়ান কিংবা সিটি করপোরেশনের ট্যাক্স পেমেন্টের রশিদ (মূলত যাদের স্থায়ী ঠিকানায় নিজেদের বাড়ি আছে তাদের কাছ থেকে এই খতিয়ান কিংবা সিটি করপোরেশনের ট্যাক্স পেমেন্টের রশিদটি চাওয়া হয়)
অভিজ্ঞতাঃ পুলিশ ভেরিফিকেশন, কোনো প্রকার আর্থিক লেনদেন ছাড়া! জ্বী, ঠিকই শুনেছেন।আপনার ভাগ্য ভালো থাকলে, শত শত নর্দমার কীটের মাঝে দেখা পাবেন এমন কিছু সৎ মানুষের, যারা কিনা নিঃস্বার্থভাবে নিজেদের দায়িত্ব পালন করে যাবে, বাড়িয়ে দিবে সহযোগীতার হাত। ঠিক এমনই এক মানুষের দেখা পেয়েছিলাম পুলিশ ভেরিফিকেশনে। এনরোলমেন্ট কমপ্লিট হওয়ার ১ দিন পরেই (বৃহস্পতিবার) ফোনে মেসেজের মাধ্যমে তিনি জানিয়ে দেন কি কি কাগজপত্রগুলো রেডি রাখতে হবে। তার ঠিক পরের দিন অর্থাৎ শুক্রবার সকালের ভিতর সব কাগজপত্র রেডি করে জুম্মার পর তাকে ফোন দেই এবং লাঞ্চের পর পরে সে এসে হাজির হয়। তিনি এসেই আমাকে ২টি ফর্ম ফিলাপ করতে দেয় যেখানে একটি ছিলো আমার নিজের পরিচয়, আরেকটি বাবার অঙ্গীকারনামা। কিভাবে কি লিখতে হবে উনিই সব বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। ফর্ম ফিলাপ শেষে সকল ডকুমেন্টস একসাথে স্ট্যাপল করে নিয়ে তিনি চলে যান, রেখে যান সততার পদচিহ্ন।*উল্লেখ্য আমার স্থায়ী এবং অস্থায়ী ঠিকানা একই হওয়ার কারণে একবারই পুলিশ ভেরিফিকেশন হয়েছে।*আপনি যদি সাকসেসফুলি পাসপোর্ট অফিস থেকে আপনার এনরোলমেন্ট কমপ্লিট করে আসেন তাহলে ই-পাসপোর্টের ওয়েবসাইটে আপনার স্ট্যাটাস দেখাবে “Enroled, pending approval”। এর মানে হচ্ছে আপনার অ্যাপ্লিকেশনটি পাসপোর্ট অফিস কর্তৃক এনরোল্ড হয়েছ, শুধুমাত্র পুলিশ ভেরিফিকেশনটি বাকি। অর্থাৎ, যখন আপনার পুলিশ ভেরিফিকেশন হয়ে যাবে, তখন আপনার স্ট্যাটাস দেখাবে “Approved”।তো, অনেকেরই দেখা যায় পুলিশ ভেরিফিকেশন কমপ্লিট হয়ে যাওয়ার পরেও অনেকদিন ধরে “Enroled, pending approval” স্ট্যাটাসে আটকে থাকে।যেমন, আমার এই স্ট্যাটাসে ১৩ দিন আটকে ছিলো যেখানে এসআইকে কল দিয়ে জিজ্ঞেস করলে প্রতিবারই একই উত্তর পেতাম, “আপনার অ্যাপ্লিকেশনটি পরের দিনেই পাঠিয়ে দিয়েছি”।আবার, অনেকেই দেখলাম সেইম সিচুয়েশন ফেস করে পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগ করলে তাদের উত্তর, “আপনার পুলিশ ভেরিফিকেশন জমা হয় নি”।
এক্ষেত্রে আপনার করণীয় কি? সর্বপ্রথম ই-পাসপোর্ট ওয়েবসাইটে “Contact” এ থাকা “Support Request” এ আমার সমস্যাটার কথা বিস্তারিত তুলে ধরি। সেখান থেকে আশানুরূপ প্রতিক্রিয়া না পেয়ে টানা ১৩ দিন “Enroled, pending approval” স্ট্যাটাসে আটকে থাকার পর সিদ্ধান্ত নেই AD (adpassport@passport.gov.bd) এবং DD (ddpassport@passport.gov.bd) বরাবর একটি মেইল করবো। যদিও আমার পাসপোর্ট ডেলিভারি ডেট ছিলো ১৪ই অক্টোবর তাই ডেলিভারি ডেটের আগে পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগ করতে চাই নি। তবে চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছি যেন ১৪ তারিখের ভিতরেই পাসপোর্ট হাতে পাই, কোনোরকম লেট যেন না হয় এবং বিস্ময়করভাবে তাদেরকে মেইল করার ২ দিন পর আমার স্ট্যাটাস “Enroled, pending approval” থেকে “Approved” হয়ে যায়।এখন, এটা কি এমনিতেই হলো নাকি মেইলের কারণে হলো সঠিক জানা নেই।তবে যাদের ডেলিভারি ডেট পার হয়ে গেছে কিন্তু এখনো “Enroled, pending approval” এ আটকে আছে তাদের বলবো অতি জলদি পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করতে। যদি সেখান থেকে বলা হয় আপনার পুলিশ ভেরিফিকেশনটি জমা হয় নি তখন তৎক্ষনাৎ থানায় যোগাযোগ করবেন এবং লেগে থাকবেন। এক পরিচিত ভাইয়ের সেইম সিচুয়েশন ফেস করতে হয়েছিলো এবং তিনি থানায় যোগাযোগের মাধ্যমে সমস্যাটা বেশ জলদি সমাধান করে ফেলেন।
ই-পাসপোর্ট কালেকশনঃ ই-পাসপোর্ট কালেক্ট করাও বেশ সহজ একটি প্রোসেস। সোজা তৃতীয় তলায় উঠে হাতের ডান পাশে এগোলেই দেখতে পাবেন ই-পাসপোর্ট ডেলিভারি কাউন্টার (৩০১)। সেখানে আপনার ডেলিভারি স্লিপ জমা নিয়ে আপনাকে একটি সিরিয়াল নাম্বার সম্বলিত টোকেন দেওয়া হবে যার ভিত্তিতে আপনার ই-পাসপোর্ট ডেলিভারি করা হবে। উপরে থাকা স্ক্রিনে আপনার টোকেন নাম্বার শো করলে আপনার ফিংগারপ্রিন্ট দেওয়ার মাধ্যমে আপনি পেয়ে যাবেন আপনার কাঙ্ক্ষিত ই-পাসপোর্ট।
WhatsApp us